শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে‌ পরিচয় দানকারী টাঙ্গাইল জেলার ‘সমন্বয়ক’ রিমান্ডে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে‌ পরিচয় দানকারী টাঙ্গাইল জেলার ‘সমন্বয়ক’ রিমান্ডে।

আলোকিত ডেস্ক:- টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের বাসা ভাঙচুর, লুটপাট, দখল ও ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে।

চার দিনের রিমান্ড শেষে মারইয়াম মুকাদ্দাস নামের এই ‘সমন্বয়ককে’ বৃহস্পতিবার বিকালে টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. গোলাম মাহবুব খাঁন তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানভীর আহম্মেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল ও চাঁদা দাবির উদ্দেশ্য, বিদেশে যাওয়ার কারণসহ বিভিন্ন তথ্য জানতে মারইয়ামকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাই তাকে আবার রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।”

রোববার রাত ১২টায় শহরের পশ্চিম আকুর-টাকুরপাড়া (হাউজিং) এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার তাকে চারদিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ।

গ্রেপ্তার মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের জশিহাটী গ্রামের মাজহারুল ইসলামের মেয়ে। তিনি টাঙ্গাইল শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

এর আগে শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ নেতা জোয়াহেরুল ইসলামের (ভিপি জোয়াহের) শহরের ছোট কালীবাড়ি রোডের ছয়তলা ভবনটি দখল করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ‘সমন্বয়ক’ মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি। পরে রাতে বাড়িটি দখলমুক্ত করে যৌথবাহিনী। সেই সময় মিষ্টিকে আটক করা হলেও পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

এ ঘটনায় রোববার সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা খান (৫৮) সমন্বয়ক মিষ্টির বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল থানায় মামলা করেন।

মারইয়ামের পক্ষে অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম রতন ও সিরাজুল ইসলাম শুনানিতে অংশ নেন। তারা মারইয়ামের জামিন চান। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ বলেছে, মারইয়াম মুকাদ্দাস নিজের পরিচিতি ও গুরুত্ব বাড়াতে এবং এই পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়াতে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে বাড়িগুলো দখলের উদ্যোগ নেন। চার দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ এমন তথ্যই পেয়েছে। তবে কোনো সংগঠনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আছে কিনা সে তথ্য এখনও পায়নি পুলিশ।

পুলিশ বলেছে, মারইয়াম টাঙ্গাইল শহরে একটি এনজিও করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সে সময় কিছু আওয়ামী লীগ নেতার অসহযোগিতার কারণে সেটি ঠিকমতো চালাতে পারেননি। ২০২০ সালে এনজিওটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই ওইসব নেতাদের প্রতি তার ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভের কারণেই বাড়িঘর ভাঙচুরে নেতৃত্ব দেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত অন্য নেতারা আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর ও দখল করে দাতব্য প্রতিষ্ঠান করার পক্ষে ছিলেন না। মারইয়াম মুকাদ্দাস তার কিছু অনুসারী নিয়ে নিজের ‘গুরুত্ব’ বাড়াতে ভাঙচুর ও দখলের পথে হাটেন।

পুলিশ বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানতে পেরেছেন যে মারইয়াম ঢাকায় একটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়েছেন। পরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনে স্নাতকে ভর্তি হলেও কোর্স শেষ করতে পারেননি। তিনি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতের কাশ্মিরসহ একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। টাঙ্গাইলে এনজিও করতে ব্যর্থ হয়ে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেন। গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে পরিচিতি পান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ সংবাদ

.