অবশেষে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীসহ ৩৩ জনের নামে দুদকের ১২ মামলা
আলোকিত ডেস্ক:- লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত অর্থের অতিরিক্ত এক হাজার ১২৮ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে ১২টি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এসব মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, বিগত ২০০৭-০৮ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের সময়ে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেশন কমিটি (এনসিসি) এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (এসিসি) কোঅর্ডিনেটর লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূর আলী, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, উপজেলার চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে, বায়রা’র বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে সিন্ডিকেট করে বিএমইটি ও বায়রা’র রেজিস্ট্রেশনের শর্ত ভঙ্গ করে সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার চেয়ে ৫ গুণ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেন।
তারা মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রিক্রুটের জন্য এজেন্ট হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে রিক্রুটেড শ্রমিকদের অবৈধ ভাবে ক্ষতি সাধন করে বিভিন্ন ধাপে বাড়তি অর্থ গ্রহণের অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার দলীয় মন্ত্রী, এমপি, উপজেলার চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর হিসেবে প্রভাব খাটান। এছাড়াও চুক্তিবদ্ধ আইনসঙ্গত পারিশ্রমিক ব্যতীত এবং চুক্তির শর্ত মোতাবেক কর্মকাণ্ড না করে পাবলিক সার্ভেন্ট হিসাবে অবৈধ পারিতোষিক গ্রহণ করে মালয়েশিয়ায় প্রেরিত কর্মীর কাছ থেকে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রতি কর্মীর কাছ থেকে নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন। তারা অবৈধভাবে গৃহীত অর্থ অবৈধ পন্থায় হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তরের মাধ্যমে অর্থ পাচার করে আসামিরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অন্য আসামিরা হলেন— মেসার্স ওরবিটাল এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামালের স্ত্রী মিসেস কাশমিরি কামাল, মেয়ে মিসেস নাফিসা কামাল, স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী ফেনী ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম, তার প্রতিষ্ঠান স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেডের কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ, জাহাঙ্গীর আলম, এম. আমিরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, মো. জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া। বিনিময় ইন্টারন্যাশনালের মালিক ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার।
ফাইভএম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মালিক ও ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ আব্দুল মুকিত, মেহবুবা আফতাব সাথি এবং তাসনিয়া মাসুদ চৌধুরী। মেসার্স ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক ব্যবসায়ী মোহা. নুর আলী ও তার স্ত্রী সেলিনা আলী, মেয়ে নাবিলা আলী, নাছির উদ্দিন আহমেদ, খোন্দকার শওকত হোসেন।
ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মালিক মোহাম্মদ রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী লুৎফুর নেছা শেলী, মেসার্স আহমদ ইন্টারন্যাশনালের মালিক সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ, বিএম ট্রাভেলস লিমিটেডের মালিক ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তার, বিএনএস ওভারসিজের মালিক ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবুল বাশারের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশতিয়াক আহমেদ সৈকত ও তার স্ত্রী মিসেস নসরুন নেছা, রুবেল বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিক মুহাম্মাদ মজিবুল হক রুবেল ও তার স্ত্রী কামরুন নাহার হীরামনি এবং ইফতি ওভারসীজের মালিক মো. রুবেল, চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন (পান্না)।
আক্তার হোসেন জানান, আসামিরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর নামে সাব-এজেন্ট, বিমানের টিকিট ও অন্যান্য মধ্যস্বত্বভোগীরা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।